ই-স্পোর্টস এর ইতিহাস এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
ই-স্পোর্টস শিল্পের ভবিষ্যত সম্ভবত মোবাইল দ্বারা চালিত হবে, যা প্রবেশের বাধাগুলিকে আরও কমিয়ে দেবে এবং আরও বেশি গেমার এবং অনুরাগীদের প্রবেশের অনুমতি দেবে৷ মোবাইল গেমিং বিভাগটি এই বছর মোট বিশ্বব্যাপী গেমসের বাজারের ৪৫% তৈরি করবে৷ . সেই জনপ্রিয়তা ইতিমধ্যেই কিছু প্রতিযোগিতামূলক জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে, কারণ চীনে ইতিমধ্যেই একটি সমৃদ্ধ মোবাইল এস্পোর্টস দৃশ্য রয়েছে।
ভিডিওগেমের আবির্ভাব বিগত শতকের শেষের দিকে আশির দশকে। এই বিগত তিরিশ বছরে সে দ্বি-মাত্রিক থেকে ত্রি-মাত্রিক আকার নিয়েছে, সঙ্গে সৃষ্টি করেছে জন-উন্মাদনার। নাম নিয়েছে E-sports বা ইলেকট্রনিক স্পোর্টস।
ই-স্পোর্টস কি?
ই-স্পোর্টস বা ইলেকট্রনিক স্পোর্টস হচ্ছে একপ্রকার কম্পিটিশন, যেখানে ভিডিও গেইমের মাধ্যমে প্রতিযোগীদের যাচাই করা হয়। এই ধরণের কম্পিটিশন গুলো সিংগেল প্লেয়ারের মধ্যেও হতে পারে, আবার মাল্টিপ্লেয়ার এর মাঝেও হতে পারে। এছাড়া টিমের মাধ্যমেও এই ই-স্পোর্টস কম্পিটিশন করা যায়।
এই ধরণের কম্পিটিশনে যুক্ত হতে হলে প্রতিযোগীকে একজন প্রফেশনাল গেইমার হতে হয়।
ই-স্পোর্টস এর ইতিহাস:
১৯ ই অক্টোবর, ১৯৭২ তারিখে, শেষ পর্যন্ত সেই সময়টি এসেছিল: স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ল্যাবরেটরি বিশ্বের প্রথম ই-স্পোর্টস টুর্নামেন্ট, “ইন্টারগ্যাল্যাকটিক স্পেসওয়ার অলিম্পিক” আয়োজন করেছিল। ২৪ জন খেলোয়াড় এই দিনে “স্পেসওয়ারে” প্রতিযোগিতা করার জন্য মিলিত হয়েছিল।
ভিডিও গেম কোম্পানি Atari প্রথম এস্পোর্ট তৈরির জন্য দায়ী। তারাই ১৯৮০ সালে স্পেস ইনভেডারস চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করেছিল। এই প্রতিযোগিতা প্রায় ১০০০০ অংশগ্রহণকারীকে আকর্ষণ করেছিল।
১৯৮০ সালের ০১ নভেম্বর প্রথম ভিডিও গেম টুর্নামেন্ট:
১৯৮০ সালের নভেম্বরে, আতারি প্রথমবারের মতো বড় আকারের ভিডিও গেম টুর্নামেন্টের আয়োজন করে: ন্যাশনাল স্পেস ইনভেডারস চ্যাম্পিয়নশিপ। এটি তাদের জনপ্রিয় গেম, স্পেস ইনভেডারস অন দ্য আটারি ২৬০০ এর কনসোল প্রকাশের প্রচারে সহায়তা করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। টুর্নামেন্টে ১০০০০ জন অংশগ্রহণকারী ছিল এবং ই-স্পোর্টের বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল কারণ এটি প্রতিযোগিতামূলক গেমিংকে জনপ্রিয় করতে সাহায্য করেছিল এবং ভবিষ্যতের টুর্নামেন্ট ঘটতে অনুপ্রাণিত করেছিল।
০১ জানুয়ারী ১৯৯০, নিন্টেন্ডো ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ:
সম্ভবত ১৯৯০ এর দশকের সবচেয়ে বড় ভিডিও গেম টুর্নামেন্ট, নিন্টেন্ডো ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে হাজার হাজার প্রতিযোগী ০৬ মিনিট এবং ২১ সেকেন্ডের সময়সীমা সহ সুপার মারিও ব্রোস, র্যাড রেসার্স এবং টেট্রিস গেমসে সর্বোচ্চ স্কোর পেতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। এই টুর্নামেন্টে বিজয়ীর জন্য $১০০০০ নগদ পুরস্কারের পাশাপাশি একটি রূপান্তরযোগ্য এবং একটি টেলিভিশন সহ মহাকাশ আক্রমণকারীদের টুর্নামেন্টের পরে একটি বড় পুরস্কার পুল বৈশিষ্ট্যযুক্ত। এই টুর্নামেন্টটি ভবিষ্যতের টুর্নামেন্টে বড় পুরস্কার পুলের জন্য স্বর সেট করতে শুরু করেছে।
প্রফেশনাল গেমাররা কি করে?
প্রফেশনাল গেমাররা সাধারণত বিভিন্ন ড্রিলের মাধ্যমে কোন একটা স্পেসিফিক গেমে নিজেদের দক্ষ করে তোলে। যাতে কোনো ধরনের কম্পিটিশনে গেলে ভালো করতে পারে। বর্তমানে আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে প্রফেশনাল গেইমার তৈরি হচ্ছে, যা ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটি সুখকর বিষয়। বাংলাদেশের বিশেষ ভাবে আলোচিত গেইম হচ্ছে পাবজি গেইম, ফিফা, পেস ইত্যাদি।
প্রফেশনাল গেমাররা সাধারণত বিভিন্ন ধরনের কম্পিটিশনে যোগ দেয়। অনেকটা প্রিমিয়ার লিগ বা যেকোনো ধরনের টুর্নামেন্টের মত। যদি টুর্নামেন্টে কোন প্লেয়ার ভালো করতে পারে এরপর থেকে তার বিভিন্ন দিক উন্মুক্ত হয়ে যায়। বিভিন্ন ধরনের স্পন্সরশিপ থাকে গেইমারদের জন্য। এভাবে আসলে সে গেমিং ইন্ডাস্ট্রির সাথে যুক্ত হতে পারে।
গেমাররা কিভাবে আয় করে?
একজন প্রফেশনাল গেমারের অ্যাভারেজ আয় ৬০ হাজার ডলার। এই সেক্টরে সর্বোচ্চ আয় হচ্ছে ঘণ্টায় প্রায় ১৫ হাজার ডলার। এদের মধ্যে অনেকে আবার শখের বসে গেম খেলে আয় করে থাকেন। আমরা হয়তো অনেকে জনপ্রিয় ইউটিউবার ‘ফিউডিফাই’ কে চিনি। তিনিও একজন গেমার। তবে তিনি মূলত এন্টারটেইনিং মিম শেয়ার গেইমার। বিভিন্ন মজাদার ক্লিপ এর সমন্বয়ে ভিডিয়ো কন্টনেট তৈরি করে থাকে।
এছাড়াও একজন গেইমার স্পন্সরশীপের মাধ্যমে আয় করতে পারেন। রিসেন্টলি দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের কোর্স তৈরি হচ্ছে কিভাবে গেইমে প্রফেশনালি ভালো করা যায়। এক্ষেত্রে কোর্স বানিয়েও আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
একজন প্রফেশনাল গেমার আর বিভিন্ন রকম হতে পারে। আজকে আমরা কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব যেভাবে আসলে গেমাররা আয় করে থাকেন-
২০২০ সালের হিসাবে, ফোর্বস অনুসারে শীর্ষ পাঁচটি মূল্যবান এস্পোর্টস দল হল:
-
TSM – Value: $540 million:
২০২১ আনুমানিক আয়: $56 মিলিয়ন ২০২০ থেকে পরিবর্তন: 32% মূল মালিক: অ্যান্ডি দিন
100 Thieves – Value: $460 million:
২০২১ আনুমানিক আয়: $38 মিলিয়ন ২০২০ থেকে পরিবর্তন: 142% মূল মালিক: ম্যাথিউ হাগ, ড্রেক, স্কুটার ব্রাউন, ড্যান গিলবার্ট, রাচেল হফস্টেটার, জ্যাক ডানলপ
-
Team Liquid – Value: $440 million:
২০২১ আনুমানিক আয়: $38 মিলিয়ন ২০২০ থেকে পরিবর্তন: 42% মালিক: অ্যাক্সিওম্যাটিক গেমিং, ভিক্টর গুসেনস, স্টিভ আরহান্সেট
FaZe Clan – Value: $400 million
২০২১ আনুমানিক আয়: $40 মিলিয়ন ২০২০ থেকে পরিবর্তন: 31% মূল মালিক: লি ট্রিঙ্ক, মাইকেল স্টাং ট্রেশো, ইউসেফ আবদেলফাত্তাহ, রিচার্ড বেঙ্গস্টন, টমাস অলিভেরা, নর্ডান শ্যাট
-
Cloud9 – value: $380 million
Write a Comment