নিউজে প্রায়ই এমন খবর পাওয়া যায়, যেখানে ক্যানিবলিজম বা নরমাংস ভক্ষকের হিংস্রতার বিষয় তুলে ধরা হয়। মানুষ মানুষের মাংস খেলেও, কখনও কি শুনেছেন মানুষ শুধু মানুষের মগজ খায়? এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কি না? একটা নরখাদক মানুষের কাছে মগজ খাওয়া তেমন ব্যাপারই না, কিন্তু এই মস্তিষ্ক ভক্ষন একটা সময় হয়েছিল গোটা একটা জাতি ধ্বংসের কারন!
মানুষখেকো নিয়ে নানা রকম খবর হলেও অতীতে রয়েছে বিশাল ইতিহাস। এমন সময়, যখন মানুষের মাঝে সভ্যতার ছিঁটেফোঁটাও ছিল না। তারা ছিল শিকারপ্রবন। ইতিহাস খুঁজলে পাওয়া যায়, ওশিয়ানির এক ছোট্ট দ্বীপ পাপুয়া নিউগিনির দক্ষিন ফোর এলাকা, যেখানের মানুষজন পঞ্চাশের দশকে মানুষর মগজ খেতো। এককথায় বলা যায়- “নরমগজখাদক”। মানুষের মগজ ছিল তাদের খাদ্যাভাসের প্রথম সারিতে। তাই বলে তারা কিন্তু সব মানুষের মগজ খেতো না। মৃত আত্নীয়ের মগজ খেতো তারা। এটাই তাদের ধর্মীয় রীতি। এদের পরিবারের কোনো সদস্য মারা গেলে লাশটির থেকে মগজ সংগ্রহ করত। পরবর্তীতে পরিবারের বাকী সদস্যরা মিলে তা খেত। ভাবলেই গা শিউরে উঠে, তাই না? তখন তাদের কাছে এটা ছিল অতি স্বাভাবিক ব্যাপার।
পাপুয়া নিউগিনির এই বাসিন্দারা যেন আদিমানবের জাতভাই। বিশেষ করে তাদের নরমগজ ভক্ষনের বিষয়টি খুবই ভয়ংকর। এসব খেয়ে স্বাভাবিক জীবনধারন করলেও ষাটের দশকে বিরাট ধ্বস নামে। এক অজানা রোগ ছড়িয়ে পড়ে নিউগিনির সর্বত্র। বিশেষ করে ঐ মানবখেকো জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রবল আকার ধারন করে এই রোগ। রোগটির নাম দেয়া হয় কুরু বা Laughing Sickness. নারীরা বেশি আক্রান্ত হতো “কুরু” নামক মারাত্নক এই ব্যাধিতে। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির প্রথম অবস্থায় নড়াচড়া ও কথা বলায় সমস্যা হতে থাকে, এক পর্যায়ে হাঁটাচলায় অক্ষম হয়ে যায়। এর শেষ পরিনতি মৃত্যু।
এরপর রোগের কারন বের করার অনেক প্রচেষ্টা চালানো হয় কিন্তু কোনো কিছুই স্পষ্ট সামনে আসে না। তবে অনুমান করা যাচ্ছিল যে, মানুষখেকো সম্প্রদায়ের থেকেই এর উৎপত্তি ঘটে। তাদের মধ্যে রোগের প্রকোপ ছিল বেশি। মানব মস্তিষ্কের দূষিত অংশগুলো এই রোগের উদ্ভব বলেও ধরা হয়। তার পরপরই অস্ট্রেলীয় সরকার মানুষ খাওয়ার উপর সম্পূর্নরুপে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তারপর ধীরে ধীরে রোগের প্রকোপ কমতে থাকে, তখন ধারনা আরও জোরদার হয়। শুরু হয়, এ রোগ থেকে পরিত্রানের অনুসন্ধান।
সেই সময়ে আরও একটি রোগের প্রভাব দেখা যায়, যার নাম ছিল “ম্যাড কাউ”। এ রোগটি যদিও গরুর, তবে মানুষের দেহেও সংক্রমিত হতে পারে, এমনকি বিলুপ্ত করতে পারে পুরো জাতি। এ রোগে আক্রান্ত গরুর মগজ খেলেও কুরু রোগ ছড়ায়। মানুষকেও আক্রান্ত করে এমন কারনেই এই নাম দেয়া। গবেষনা চলাকালীন অদ্ভুত কিছু বিষয় সামনে আসে, যেমন- ‘কুরু’রোগ আর ‘ম্যাড কাউ’ রোগের লক্ষন মোটামুটি এক। আবার, কুরু রোগে অনেক মানুষ মারা গেলেও, অনেকে কুরু আক্রান্তের মগজ খেয়ে সুস্থ অবস্থায় বেঁচে আছে। পরবর্তীতে মগজ খাওয়া সেসব লোকদের ডিএনএ সংগ্রহ করে প্রতিষেধক বানানো হয়, ফলে এ রোগ থকে পরিত্রানের সুযোগ ও সম্ভাবনা তৈরি হয়।
তবে এটাই শেষ নয়, জাপানি বাদে অন্য সব প্রজাতির পূর্বপুরুষই জীবনের কোনো এক পর্যায়ে নরখাদক ছিল। এখনও অনেক জাতির অস্তিত্ব পাওয়া যায়, যারা মানুষ খাওয়াতে বেশি মজা খুঁজে পায়।
Writer,
Somaiya Afrin Eva Khondokar
Intern, Content Writing Department
Requin BD
4 Comments
Zayed
April 2, 2023
Nice information
Suriya Yeasmin
April 2, 2023
so much terrible to know all this information.
Shajuti Kundu
May 13, 2023
Quite information
KageSaili
November 16, 2024
den Hollander P, Savage MI, Brown PH dapoxetine for premature